08 November, 2014

জেনে নিন কি-বোর্ডের জরুরী কিছু শর্টকাট !

কম্পিউটারে নানা ধরণের কাজে কীবোর্ডের শর্টকাট জানা থাকার সুবিধা অনেক। এতে করে যেমন আপনার কাজের গতি বেড়ে যাবে কয়েকগুণ তেমনি ছোটখাটো বেসিক ব্যাপারে মাউস নিয়ে টানাটানির ঝামেলা থেকেও মুক্তি
পাবেন। আসুন জেনে নেই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শর্টকাট সম্পর্কে।
ট্যাব খোলা ও বন্ধ করা:
ব্রাউজারে খোলা অনেকগুলো ট্যাবের মধ্যে এক বা একাধিক ট্যাবের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে? এক্ষেত্রে একটি সিঙ্গেল ট্যাব বন্ধ করার জন্যে কীবোর্ডে চাপুন  Ctrl + W । আর Ctrl + Shift + W চাপুন পুরো উইন্ডোটিই  বন্ধ করে দিতে চাইলে। ভুলবশত প্রয়োজনীয় একটি ট্যাব বন্ধ করে ফেলেছেন? চিন্তা নেই, Ctrl + Shift + T প্রেস করে এ ধরণের ট্যাবগুলোকে পুনরায় চালু করতে পারবেন। আর নতুন ট্যাব খোলার জন্যে Ctrl + T চাপলেই হবে।
ওয়ার্ডে ফন্টের আকার বাড়াতে বা কমাতে:
মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে কোনো কোনো ফাইলের কাজের ক্ষেত্রে প্রায়ই বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আকারের ফন্ট ব্যবহার করতে হয়। বারবার মাউস দিয়ে এ কাজটি করা বিরক্তিকর। কীবোর্ডে অতি সহজে এ কাজটি করার জন্যে প্রথমে আপনাকে ফন্ট সাইজ অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। এরপর ফন্টের আকার বড় করতে চাপুন Ctrl + ] আর ছোট করতে Ctrl + [  ।
বিভিন্ন উইন্ডোতে সুইচ করতে:
অনেক সময় কাজের স্বার্থে একইসাথে কয়েকটি উইন্ডো খোলা রাখতে হয় এবং প্রয়োজনমত একটি থেকে আরেকটিতে সুইচ করতে হয়। এসব ক্ষেত্রেও বারবার মাউস ব্যবহার না করে কীবোর্ডের বাটন ব্যবহার করে খুব সহজে কাজ করা যায়। মাইক্রোসফট উইন্ডোওসের যে কোনো ভার্সনের বিভিন্ন উইন্ডোতে বা প্রোগ্রামে সুইচ করার জন্যে প্রেস করুন Alt + Tab  অথবা Windows key + Tab  এর মধ্যে যে কোনো একটি। তবে অপেক্ষাকৃত ভালো ভিউ পাবার জন্যে  Windows key + Tab শর্টকাটটি ব্যবহার করাই উত্তম।
পাশাপাশি একাধিক উইন্ডো খুলতে:
গবেষণাধর্মী কাজে অনেক সময়ই ওয়ার্ড এবং ওয়েব ব্রাউজারের মাঝে সমন্বয় সাধন করে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে ওয়ার্ডের ফাইলটি এবং ওয়েব ব্রাউজার উইন্ডোটি পাশাপাশি খোলা থাকলে কাজ করতে অনেক সুবিধা হয়। এই সুবিধা পেতে হলে প্রথমে ওয়ার্ড ডকুমেন্টটি ওপেন করুন, Windows + Left arrow key চাপুন। এবার ব্রাউজারটি ওপেন করুন এবং Windows + Right arrow key প্রেস করুন; আপনার ওয়ার্ড ডকুমেন্টের ডানপাশে পেয়ে যাবেন ব্রাউজার উইন্ডোটি।

 

তথ্য ডিলিট, স্থানান্তর করতে:
কোনো তথ্য ডিলিট করার জন্যে Del চাপাই যথেষ্ট। তবে এক্ষেত্রে ফাইল কিংবা ফোল্ডারটি ডিলিট হয়ে জমা হবে রিসাইকেল বিনে। অপ্রয়োজনীয় তথ্যকে একবারেই কম্পিউটার ছাড়া করতে Shift + Del চাপতে হবে। যেকোনো কিছুকে কপি বা কাট করার জন্যে সেটি সিলেক্ট করে প্রেস করুন যথাক্রমে Ctrl + C বা  Ctrl + X  এবং সেটি প্রয়োজনীয় স্থানে পেস্ট করতে Ctrl+ V ।
স্ক্রিনশট সংগ্রহে:
স্ক্রিনশট ক্যাপচার করার ব্যাপারটি সম্পূর্ণভাবেই কীবোর্ডের উপর নির্ভরশীল। কোনো ডকুমেন্টের  স্ক্রিনশট নেয়ার জন্যে ডেস্কটপ ব্যবহারকারীদের চাপতে হবে Print Screen button (pssssst… Scroll Lock key এর বামে অবস্থিত)। আর ল্যাপটপের ক্ষেত্রে  Function (Fn) + Print Screen এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
শব্দ গণনায়:
প্রোজেক্টের রিপোর্ট কিংবা থিসিস পেপার ইত্যাদি তৈরির সময় বারবারই খেয়াল রাখতে হয় শব্দসংখ্যার দিকে।  বারবার টুলবারে গিয়ে শব্দসংখ্যা গণনার অপশন ব্যবহার করার ঝামেলা এড়াতে পুরো টেক্সটটি সিলেক্ট করে চাপুন Alt + T + W । একইসাথে শব্দসংখ্যা জানার পাশাপাশি জানতে পারবেন অনুচ্ছেদ, বর্ণ, পৃষ্ঠা ইত্যাদির সংখ্যাও।
ওয়ার্ডে টেক্সট সিলেক্ট করা:
মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে টেক্সট সিলেক্ট করার ক্ষেত্রে বারবার মাউস ব্যবহার করাটা খুবই বিরক্তিকর। কীবোর্ডের মজার কিছু শর্টকাট জানা থাকলে এ সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যেকোনো লাইনের প্রয়োজনীয় অংশে মাউসের কারসর স্থাপন করে প্রেস করুন Shift + Windows key; এরপর কারসরটি যেখানে স্থাপন করবেন ততটুকু স্থান সিলেক্ট হয়ে যাবে। টেক্সটের শুরু থেকে প্রয়োজনীয় অংশ পর্যন্ত সিলেক্ট করতে কারসরটি স্থাপন করে চাপুন Ctrl + Shift + Up arrow key । একইভাবে শেষ থেকে প্রয়োজনীয় অংশ পর্যন্ত সিলেক্ট করতে হলে চাপুন Ctrl + Shift + Down arrow key । পুরো টেক্সটটি একবারে সিলেক্ট করতে চাইলে প্রেস করুন Ctrl + A ।
পাওয়ার পয়েন্টের কিছু শর্টকাট:
উইন্ডোওসের বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাঝে পাওয়ার পয়েন্ট বহুল ব্যবহৃত একটি। পাওয়ার পয়েন্টের অনেকগুলো স্লাইডের মধ্যে একটিতে যেতে হলে সাধারণত স্ক্রল ডাউন করতে হয়। তবে স্ক্রল ডাউনের ঝামেলা এড়িয়ে সরাসরি ঐ স্লাইডটিতে পৌঁছাতে হলে স্লাইডের নম্বর আর Enter key একসাথে চাপাই যথেষ্ট। উদাহরণস্বরূপ- আপনার হয়ত ৭ নম্বর স্লাইডটি দেখা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে চাপুন 7 + Enter । নতুন স্লাইড সংযোজনের জন্যে চাপতে হবে Crtl + M । আর সর্বশেষ কমান্ডের পুনরাবৃত্তির জন্যে  F4 । পাওয়ার পয়েন্টে করা প্রেজেন্টেশনটি কাউকে প্রথম স্লাইড থেকে দেখানোর জন্যে চাপুন F5, আর কারেন্ট স্লাইড থেকে দেখাতে Shift + F5 । ফন্ট সাইজ বড় করতে হলে টেক্সট সিলেক্ট করে Ctrl + Shift + >  এবং ছোট করতে টেক্সট সিলেক্ট  Ctrl + Shift + < চাপুন।
এক্সেলের কিছু শর্টকাট:
মাইক্রোসফট এক্সেলেরও রয়েছে নানাবিধ শর্টকাট। যেমন বিভিন্ন ওয়ার্কশীটের মাঝে ডান থেকে বামে সুইচ করতে চাপুন Ctrl + Page Up  আর বাম থেকে দানে সুইচ করতে Ctrl + Page Down । নতুন ওয়ার্কশীট যোগ করতে প্রেস করুন hit Alt + Shift + F1 । নির্দিষ্ট সেলে টাইম ফরম্যাট অ্যাপ্লাই করতে চাপুন Ctrl + Shift + @ আর ডেট ফরম্যাটের জন্যে Ctrl + Shift + # ।
উইন্ডোওস (হোম) কী-র আরও কিছু শর্টকাট:
স্টার্ট মেনু ওপেন করা ছাড়াও উইন্ডোওস কীর মাধ্যমে অনেকগুলো টাস্ক সহজেই সম্পন্ন করা যায়। অনেকগুলো উইন্ডো একসাথে খোলা থাকা অবস্থায় ডেস্কটপে সরাসরি ফিরে যেতে চাপুন Windows key + D। সর্বশেষ ব্যবহৃত উইন্ডোতে আবার ফিরে যেতেও এই একই কমান্ডই যথেষ্ট। Windows + L কমান্ডের মাধ্যমে পিসিকে সরাসরি লক করা যাবে।
কীবোর্ডের রয়েছে এরকম আরও অনেক শর্টকাট। মাউসের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে কাজের গতিকে বৃদ্ধি করতে চাইলে শর্টকাটগুলো শিখে নিয়ে নিয়মিত চর্চা করুন।

ভালো লাগলে মন্তব্য করবেন আর এখানে একটা লাইক ‍দিবেন।

  • 1Blogger Comment
  • Facebook Comment

1 Comment

  1. বহুল ব্যবহৃত কীবোর্ডের শর্টকাট কী আপনি তুলে ধরেছেন। খুবই ভাল হয়েছে। সকলের এই সকল বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন- যারা কম্পিউটার চালায়।
    তবে আমি কিছু ফটেশপের শর্টকাট কী এর সন্ধান দিতে পারি। এটা ডিজাইনারদের জন্য অনেক ভাল করবে (দ্রুত কাজের জন্য)। শর্টকাট কীগুলো সম্পর্কে জানতে ফটোশপ শর্টকাট কীতে প্রবেশ করতে পারেন।

    ReplyDelete

ব্লগের পোষ্ট সমুহ ভালো লাগলে অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন।আপনার মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে একজন টিউনার ভালো কিছু লেখার উৎসাহ পাবে। আর অবশ্যই বাজে মন্তব্য করবেন না।